প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত

তিন বছর পর, যখন বিপুল সংখ্যায় নবী পুরুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে শুরু করে এবং সাধারণ মানুষের ভেতর এ সম্পর্কে কথাবার্তা হতে থাকে, তখন বিশ্বপ্রভু মহান আল্লাহ তা’আলা নবী করীম (সাঃ) কে এ আদেশ দেন যে, তিনি লোকজনকে প্রকাশ্যভাবে ইসলামের দিকে আহ্বান করবেন।(১)

হুযুরে আকরাম (সাঃ) সাথে সাথেই এ নির্দেশ পালন করেন এবং মক্কার সাফা পাহাড়ের উপরে উঠে কুরাইশ বংশের বিভিন্ন গোত্রের নাম নিয়ে নিয়ে ডাকতে থাকেন। যখন সকল গোত্রের লোকজন একত্র হলো, তখন নবীজী (সাঃ) প্রথমে তাদের সকলের নিকট জিজ্ঞেস কররেন, “আমি যদি তোমাদেরকে খবর দেই যে, এক বিরাট লুণ্ঠনকারী বাহিনী তোমাদের উপর আক্রমণ করার জন্য ছুটে আসছে এবং খুব শীঘ্রই তোমাদের সকল ধন-সম্পদ তারা লুটপাট করে নিয়ে যাবে, তাহলে কি তোমরা সকলে আমার কথা বিশ্বাস করবে?”

একথা শুনে উপস্থিত সকলে একবাক্যে বলে উঠল, “নিশ্চয়, আমরা আপনার এ সংবাদ পুরোপুরি সত্য বলে বিশ্বাস করব। কেননা, আমরা আজ পর্যন্ত কখনো আপনাকে মিথ্যা বলতে শুনিনি।” তখন নবী করীম (সাঃ) বললেন, “আমি তোমাদের এ দুঃসংবাদ দিচ্ছি, যদি তোমরা তোমাদের ভ্রান্ত ধর্মবিশ্বাস পরিত্যাগ না কর, তাহলে আল্লাহ তা’আলার কঠিন আজাব শীঘ্রই তোমাদের উপর নেমে আসবে।”

সেই সাথে আরো বললেন, “আমি যতটুকু জানি, পৃথিবীর কোনো লোক তার জাতি ও গোত্রের জন্য সে উপহারের চেয়ে উত্তম কোনো উপহার নিয়ে আসতে পারেনি, যা আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি। আমি তোমাদের জন্য ইহকাল ও পরকালের মঙ্গল ও কল্যাণ নিয়ে এসেছি। বিশ্বকর্তা মহান আল্লাহ তা’আলা আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, আমি যেন তোমাদের এ ধর্মের প্রতি আহ্বান করি। আল্লাহর কসম! যদি আমি দুনিয়ার সমস্ত লোকের সাথে মিথ্যা কথা বলতাম, তবুও তোমাদের সামনে মিথ্যা বলতাম না। আমি যদি পৃথিবীর সকলকে ধোঁকা দিতাম, তবু তোমাদের কখনো ধোঁকা দিতাম না। সেই পুতঃপবিত্র সত্তার কসম, যিনি একক, যার কোনো তুল্য বা অংশীদার নেই-আমি বিশেষভাবে তোমাদের প্রতি এবং সাধারণভাবে সকল পৃথিবীবাসীর প্রতি আল্লাহ তা’আলার পক্ষ হতে প্রেরিত পুরুষ, নবী ও রাসূল।”                   [দুরুসুস্ সীরাত, পৃষ্ঠা-১০]

১. فَاصْدَعْ بِمَا تُؤْمَرُ وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِينَ এ আয়াতের মর্মার্থ, সূরা হিজর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: দয়া করে কপি করা থেকে বিরত থাকুন, ধন্যবাদ।