বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে আল্লাহর বড়ত্বের রুপরেখা

আল্লাহ সকল সৃষ্টির উর্ধে তার সমতুল্য আর কেউ নাই। তিনি কারো মুখাপেক্ষি নন। তার বড়ত্বের কোন সীমা নেই। কিন্তু মহান আল্লাহর সৃষ্টির বড়ত্বের প্রতি খেয়াল করলে মহা আল্লাহর বড়ত্বের ও কিঞ্চিত ধারণা পাওয়া যায়। যেমন আল্লাহ তার এক আয়াতে নিজের বড়ত্বের কথা উল্লেখ করেছেন।

(18)* أَفَلَا يَنظُرُونَ إِلَى الْإِبِلِ كَيْفَ خُلِقَتْ (17)* وَإِلَى السَّمَاء كَيْفَ رُفِعَتْ

(20)وَإِلَى الْجِبَالِ كَيْفَ نُصِبَتْ (19)* وَإِلَى الْأَرْضِ كَيْفَ سُطِحَتْ

এরা কি উষ্ট্রির প্রতি লক্ষ করে না? কিভাবে তা সৃষ্টি করা হয়েছে? এবং আকাশের প্রতি কিভাবে তা উর্ধ্বে স্থাপন করা হয়েছে? পাহাড়ের প্রতি কিভাবে তা স্থাপন করা হয়েছে? যমিনের প্রতি কিভাবে তা বিছানো হয়েছে?

অর্থাৎ এই সমস্ত বস্তু সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে আল্লাহর অপার কুদরত দেখতে পারা যাবে ও মহান স্রষ্টার কথা মনে পড়বে।

লক্ষীয়

তোমরা আসমানের দিকে তাকাও দেখতে পাবে কত উচু করে তা সৃষ্টি করা হয়েছে? অর্থাৎ আসমানের বড়ত্বই আল্লাহর বড়ত্বের প্রমাণ বহন করে। আমাদের এ পৃথিবীর আয়তন প্রায় ৫১ কোটি ১০ লক্ষ মাইল। আমরা পৃথিবী থেকে সোজা উপরে যা প্রথমেই দেখতে পাই তা হচ্ছে চাঁদ, চাঁদ আমাদের পৃথিবী থেকে প্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার মাইল উপরে, তার উপরে সূর্য। সূর্যটা আমাদের পৃথিবী থেকে প্রায় ৯ কোটি ৩০ লক্ষ মাইল উপরে, যেই সূর্যটাকে একটা প্লেটের মত দেখি সেই সূর্যের বড়ত্ব বলতে গিয়ে বিজ্ঞান বলে ঐ সূর্যটা আমাদের পৃথিবীথেকে প্রায় ১৩ লক্ষগুণ বড়। অর্থাৎ ১৩ পৃথিবীকে একসাথে করলে যত বড় হবে শুধু সূর্যটাকে আল্লাহ তত বড় বানিয়েছেন।

এমনিভাবে সূর্যকে কেন্দ্র করে সর্বদা ১১টি গ্রহ ঘুর্ণায়মান। ১১টি গ্রহ ৪৮টি উপগ্রহ ও হাজার হাজার ধুমকেতুসহ সূর্যের চারদিকে যে স্থান দখল করে আছে তাকে বলে গ্লাক্সির জগৎ বা সৌর জগত। এমনি মহাকাশে একটি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে অনেক গ্রহ উপগ্রহ ধুমকেতু বিচরণ করছে তাতে যে জায়গা লেগেছে তাকে বলে গ্লাক্সির জগৎ বা সৌর জগত। এরকম প্রায় ২০ হাজার গ্লাক্সির জগৎ বা সৌর জগতের আবিষ্কার করেছে বিজ্ঞান যার ঐক্যবদ্ধ নাম দেওয়া হয়েছে মিল্কিওয়ে বা ছায়া পথ। প্রতিটি ছায়াপথে প্রায় এক লক্ষ মিলিয়ন তারকারাজীর অবস্থান রয়েছে। এরকম লক্ষ লক্ষ ছায়া পথ মিলে কেয়াছার আবিস্কার ও লক্ষ লক্ষ কেয়াছা মিলে আমাদের মহাবিশ্ব। বিজ্ঞান গবেষণা করে দেখেছে মিল্কিওয়ের মধ্যে এমন কতগুলো গ্রহ নক্ষত্র রয়েছে যা আমাদের সূর্যটা থেকে কয়েক লক্ষগুণ বড়। অর্থাৎ কয়েক লক্ষ সূর্যকে একত্রিত করলে যত বড় হবে মহাকাশে এক-একটা গ্রহ নক্ষত্রকে তত বড় বানিয়েছেন। এমন লক্ষ লক্ষ গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে প্রথম আসমান অবস্থিত। এমনি প্রথম আসমানকে বেষ্টন করে আছে দ্বিতীয় আসমান, দ্বিতীয় আসমানকে বেষ্টন করে আছে তৃতীয় আসমান, তৃতীয় আসমানকে বেষ্টন করে আছে চতুর্থ আসমান, এমন সপ্তম আসমান পর্যন্ত একটা আরেকটাকে বেষ্টন করে আছে। প্রতি আসমানের সংক্ষেপ দূরত্ব হল ৫০০ বছরের রাস্তা। তার উপর আল্লাহর ৭০ হাজার নুরানী পর্দার বেষ্টুনী, যেগুলোর দুরত্ব একটি আরেকটি থেকে অসিম। তার পর আল্লাহর আরশে আযীম, তারপর কুরছি, তারপর মহান প্রভূ। সুতরাং ৭ আসমান ও ৭০ হাজার নুরানী পর্দাসহ তার বড়ত্ব কত হবে, এতেই মহা স্রষ্টার বড়ত্ব প্রমাণ হয়।

ফ্রেড হোরেল বলেন, এই পৃথিবী ও তার মহাজাগতিক পরিবেশে সৃষ্টির মূলে ‘Enormous Intelligence এবং Super Calculating intellect’ এর মত কোন স্রষ্টার হস্তক্ষেপ যে প্রয়োজন হয়েছিল তার অযুত প্রমাণ পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from Islamic History

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading