সিরিয়া সফর এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সম্পর্কে ইহুদি পণ্ডিতের ভবিষ্যদ্বানী

দাদার মৃত্যুর পর চাচা আবু তালিব নবীজীর অভিভাবক হলেন। তিঁনি আবূ তালিবের আশ্রয়ে থাকতে লাগলেন। এভাবে যখন তাঁর বয়স হলো বার বছর দু\’মাস দশ দিন, তখন আবূ তালিব ব্যবসা উপলক্ষ্যে সিরিয়া যাওয়ার ইচ্ছা করলেন। নবী করীম (সাঃ) কে সাথে নিয়ে আবূ তালিব সিরিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। পথে তায়মা নামক স্থানে তাঁরা কিছুক্ষণের জন্য থামলেন।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সম্পর্কে এক ইহুদি পণ্ডিতের ভবিষ্যদ্বানীঃ

নবী করীম (সাঃ) \’তায়মা\’ নামক স্থানে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, ঘটনাক্রমে ইহুদিদের এক বড় পণ্ডিত ব্যক্তি যাকে \’বুহায়রা রাহিব\’ বলে ডাকা হতো, তিনি নবীজীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। বুহায়রা নবীজীকে দেখতে পেয়ে আবূ তালিবকে লক্ষ্য করে বললেন, \”এই যে বালকটি আপনার সাথে রয়েছে এ কে?\” আবূ তালিব উত্তরে বললেন, \”সে আমার ভ্রাতুষ্পুত্র।\” তখন বুহায়রা বল্লেন, \”আপনি কি তার প্রতি দয়ালু এবং  আপনি কি তার হেফাজত কামনা করেন?\” তখন আবূ তালিব বল্লেন, \”অবশ্যই\”।

এ উত্তর শোনার পর বুহায়রা রাহিব আল্লাহর নামে কসম খেয়ে বল্লেন, \”যদি আপনি তাঁকে সিরিয়ায় নিয়ে যান, তাহলে সেখানকার ইহুদিরা তাঁকে মেরে ফেলবে। কেননা, এ ছেলেটি বড় হয়ে আল্লাহর নবী হবে। সে ইহুদিদের ধর্ম রহিত করে দেবে। আমি আমাদের আসমানি কিতাবে তার গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে পেরেছি।\”

লক্ষণীয়

বুহায়রা রাহিব যেহেতু তাদের ধর্মীয় কিতাব তাওরাতের অনেক বড় পণ্ডিত ছিলেন এবং তাওরাতে নবী করীম (সাঃ) এর পূর্ণ অবয়ব ও আকৃতির বিস্তারিত বিবরণ ছিল, তাই বুহায়রা নবী করীম (সাঃ) কে দেখার সাথে সাথেই চিনতে পেরেছিলেন যে, ইনিই শেষ নবী যিনি তাওরাতকে রহিত করে দেবেন এবং ইহুদি ধর্মযাজকদের রাজত্বের পরিসমাপ্তি ঘটাবেন। বুহায়রা রাহিবের কথায় আবূ তালিবের মনে ভয়ের সঞ্চার হলো, তিনি রাসূলে মাকবুল (সাঃ) কে মক্কায় ফেরত পাঠিয়ে দিলেন।

-[সীরাতে মুগলতাই, পৃষ্ঠা-১০]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Discover more from Islamic History

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading