দুনিয়ার সহায়-সম্পদ জীবনের পরম লক্ষ্য নয়ঃ
আমি পূর্বেই বর্ণনা করেছি যে, পার্থিব জগতে পরদেশ থেকে নিজ দেশে গমনকারীরা তিন শ্রেণীতে বিভক্ত হয়ে থাকে ১. কেউ শুদু মুদ্রা নিয়ে আসে। ২. অনেকে কেবল আসবাবপত্র নিয়ে আসে। ৩. কেউ ভউয়টি নিয়ে আসে। কিন্তু মানুষ যখন আল্লাহর কাছে যায়, কবরে যখন তার মৃতদেহ রাখা হয় তখন সে সব কিছু ছেড়ে যায়। কিছুই সে সাথে নিতে পারে না। এর দ্বারা এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, জীবনের লক্ষ্য এসব সামগ্রী নয়।
আখেরাত ও দুনিয়ার বাসস্থানের পার্থক্যঃ
দুনিয়া ও আখেরাতের বাসস্থানের মাঝে বিরাট ব্যবধান রয়েছে। এ জগতে বিদেশে উপার্জিত অর্থ স্বদেশে নেয়া যায়। কিন্তু প্রকৃত বাসস্থান আখেরাতে যাওয়ার সময় কাফন ছাড়া এক টুকরা কাপড়ও নেয়া যায় না। পাঞ্জাবী-পায়জামা, শার্ট-প্যান্ট, ঘড়ি-চশমা সবকিছু খুলে পকেট থেকে বের করে কাফন পরিয়ে বলা হয় যাও বন্ধু নিজ দেশে। ব্যতিক্রম কেবল এতটুকু যে, এই ধরায় উলঙ্গ অবস্থায় এসেছিলে এখন যাচ্ছ কাফন পরে। যা আল্লাহ তায়ালা তোমার জন্য ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। যখন তুমি নবজাতক ছিলে তোমাকে বস্ত্রহীন অবস্থায়ও ভাল দেখাত। কিন্তু আজ বৃদ্ধ বয়সে বস্ত্রহীন অবস্থায় আসার পছন্দনীয় নয়। তাই সম্মান ও মর্যাদার সাথে কাফন পরে আমার কাছে আস। কাফনের বিধানকে শরীয়ত বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। আজ তুমি আমার মেহমান হয়ে আসছ। তোমাকে দামী গাড়ীতে করে আনব না। বাস ও কার তোমার জন্য সম্মানজনক বাহন নয়। তুমি সৃষ্টির সেরা মানবের কাঁধে চড়ে আস। আজ-কালের বাদশাহরা কারো কাঁধে করে চলতে পারে না। যদিও কেউ চড়ে তাহলে মানুষ তাকে নিয়ে সমালোচনা করে।
জনৈক বুযুর্গ কবি বলেন, আমরা যখন এ পৃথিবীতে এসেছি তখন কিছুই নিয়ে আসিনি। আর যখন আখেরাতে যাচ্ছি তখন কী নিয়ে যাব-
ایۓتھےکس کام کو کیساکرچلے
تہمتیں چنداپنےسرپردھرچلے
এসে ছিলাম কিছু করব বলে করেছি কি ভাই!
নিন্দার বোঝা মাথায় নিয়ে ওপারেতে যাই।
তাই আমি আল্লাহর ওয়াস্তে বলছি, যারা কোন বুযুর্গের হাতে বাইয়াত হয়েছেন তারা যেন সংগোপনে অসৎ পরিবেশে যাওয়া ও গুনাহে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকেন। আল্লাহর শাস্তির অপেক্ষায় না থাকেন। যারা প্রকৃতপক্ষে তওবা করে আল্লাহপাক তাদের গুনাহের বাসনাকে নেক কাজের আকাংখায় পরিবর্তন করে দেন। দুই এক বছর গুনাহমুক্ত অবস্থায় কাটালে ইনশাআল্লাহ অন্তর আর গুনাহ করতে চাইবে না। তার মাঝে পরিবর্তন এসে যাবে। হে খোদা! আপনি আমাদেরকে আপনার ওলী হিসাবে কবুল করুন। আমিন।